why bird sitting on wire does not get shock – ইলেকট্রিক তারে পাখি বসলে শক্ লাগে না কেন, মানুষকে কেন শক্ লাগে জানুন বিস্তারিত।
আমরা অনেক সময় বাড়ির সামনে দিয়ে যে সমস্ত ওভারহেড ও ডিস্ট্রিবিউশন ইলেকট্রিক তার গিয়েছে, এমনকি মাঠে বা অন্যান্য জায়গায় যেখানে ৩৩ হাজার ভোল্টস এর ডিস্ট্রিবিউশন ইলেকট্রিক তার গিয়েছে, সেই সমস্ত ইলেকট্রিক তার গুলিতেও পাখি অনায়াসে বসে থাকলেও পাখিদের ইলেকট্রিক শক্ লাগে না।
কিন্তু সেই জায়গায় মানুষ যদি কোন ইলেকট্রিক তার কে ধরে বিশেষত যেগুলিতে কোনো ক্যাবিনেট লাগানো থাকে না । তাহলে মানুষকে কিন্তু অতি সহজেই শক্ লেগে যায়। এমনকি মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে থাকে।
একটা কথা প্রচলিত রয়েছে যে, সমস্ত যে সমস্ত প্রাণীর আর ডিম পারে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা জন্মায় সেই সমস্ত প্রাণীদের নাকি ইলেকট্রিক শক্ লাগেনা। আর যে সমস্ত প্রাণীরা বাচ্চা প্রসব করে, সে সমস্ত প্রাণীদের ইলেকট্রিক শক্ লাগে – এটি কিন্তু একেবারেই অপ্রথাগত এবং কুসংস্কার মূলক একটি কথা। এই কথার কোন ভিত্তি নাই।
এখন প্রশ্ন হল মানুষকে ইলেকট্রিক শক্ লেগে যায়, কিন্তু পাখিদেরকে কেন ইলেকট্রিক শক্ লাগে না? বা আমরাও যদি পাখিদের মত ঝুলে বা বসে থাকি ওভারহেড ও ডিস্ট্রিবিউশন ইলেকট্রিক তারের উপর তাহলে আমাদের কেউ কি ইলেকট্রিক শক্ লাগবে না? তো চলুন জেনে নেয়া যাক এর পেছনে কি রিয়ালিটি রয়েছে।
আমরা জানি ওভারহেড ও ডিস্ট্রিবিউশন ইলেকট্রিক তার সম্পূর্ণ নেকেট বা কভারবিহীন হয়ে থাকে। এবং এই তারগুলোর মধ্য দিয়ে ২ লক্ষ ৩৩ হাজার পর্যন্ত ভোট প্রবাহিত হয়ে থাকে। এত হাই ভোল্টেজ এর মধ্যেও পাখিরা তারের উপর অনায়াসে বসে থাকে। এর আসল ব্যাখ্যার পেছনে রয়েছে দুইটি কারণ।
- সার্কিট কমপ্লিট না হওয়া
- পাখির পায়ের রেজিস্ট্যান্স এর কারণে
👉 সার্কিট কমপ্লিট না হওয়া
তো চলুন জেনে নেয়া যাক সার্কিট কমপ্লিট না হওয়া বিষয়টি কি। এর জন্য পাখিদের কেন ইলেকট্রিক শক্ লাগে না। ধরুন আমরা একটি বৈদ্যুতিক ল্যাম্প অন করব এবং লাইট জ্বালানোর দুটি টার্মিনাল রয়েছে। একটি তারের মাধ্যমে আমরা ফেজ বা লাইন সরবরাহ করি, এবং অপরটিতে নিউট্রাল বা আর্থিং সরবরাহ করি ।
যখন আমরা দ্বিতীয়টিতে নিউট্রাল বা আর্থিং সরবরাহ করি, তখন সেই সার্কিট এর মধ্য দিয়ে কারেন্ট ফ্লো হয়। এবং ল্যাম্পটি জ্বলে ওঠে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা নিউট্রাল বা আর্থিং সরবরাহ করবো না, ততক্ষণ পর্যন্ত সার্কিট এর মধ্য দিয়ে কারেন্ট ফ্লো হবে না, এবং ল্যাম্প বা বাল্বটি জ্বলে উঠবে না।
অনুরূপভাবে আপনারাও অবশ্যই দেখে থাকবেন পাখিরা সব সময় একটি তারের উপর বসে থাকে। এবং পাখির শরীরের কোন অংশ অপর কোন তার বা নিউট্রাল এর সঙ্গে সংযুক্ত বা টাচ হয় না। তাই তাদের শরীরের ভেতর দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হয় না, এবং সার্কিটটিও কমপ্লিট হয় না। এইজন্য পাখিরা তারের উপরে বসে থাকলেও তাদেরকে কোন ইলেকট্রিক শক্ লাগে না ( why do birds sitting on electric wires not get shocked )
তবে যদি কোন বড় পাখি, একটি তারের ওপর বসে থাকে কিন্তু কোন কারণবশত যদি তাদের ডানা বা শরীরের অন্য কোন অঙ্গ অপর একটি ইলেকট্রিক তার কে স্পর্শ করে । অর্থাৎ যদি সে মেন সার্কিট এর উপরে বসে থাকে কিন্তু পাখিটির ডানাটা যদি অপর একটি নিউট্রাল বা আর্থিং তারের সঙ্গে টাচ হয়, তাহলে ওই পাখিটির মধ্য দিয়ে ইলেকট্রিক ফ্লো হয়, অর্থাৎ কানেকশন টি সম্পূর্ণ হয়, তখন কিন্তু ওই পাখিটিকে ইলেকট্রিক শক্ লাগবে। পক্ষান্তরে পাখিটির মৃত্যুও ঘটতে পারে।
অনুরূপভাবে আমরা যখন কোন ইলেকট্রিক ফ্যান বা লাইটের কন্ডাক্টর অর্থাৎ জ্যাকটিকে টু-পিন বা থ্রি-পিন বা ফাইভ-পিনে কানেক্ট করতে গিয়ে কোনো কারণবশত যদি আঙ্গুল একটু লেগে যায়, এবং যদি আমাদের শরীরের কোন অংশ মাটির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাহলে আমাদের শরীরের মধ্য দিয়ে কারেন্ট ফ্লো হয়ে মাটিতে চলে যায়, এর ফলে আমাদেরকে শক্ লাগে। তাই যেকোনো কাজ করার পূর্বে পলিথিন জাতীয় জুতো পড়া ভালো। এতে শক্ লাগা থেকে অনেকটা বাঁচা যায়।
👉 পাখির পায়ের রেজিস্ট্যান্স
দ্বিতীয় কারণটি হল পাখির পায়ের রেজিস্ট্যান্স। রেজিস্ট্যান্স হলো পাখির পা অত্যন্ত খসখসে এবং শুকনো হয়। পাখির পায়েতে রেজিস্ট্যান্স এতটাই পরিমাণে থাকে যে, পাখি যখন কোন ওভারহেড ও ডিস্ট্রিবিউশন ইলেকট্রিক তারের উপর বসে তখন সেই রেজিস্ট্যান্স পাখির শরীরের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রিক ফ্লো হতে বাধা সৃষ্টি করে, তাই পাখিরা ইলেক্ট্রিক তারে বসলেও শক্ লাগে না।
অপারপক্ষে হাতের মধ্য বা পায়ের মধ্যে বা পুরো শরীরের মধ্যে এই ধরনের এমন কোন রেজিস্ট্যান্স থাকে না তাই মানুষের শরীর বৈদ্যুতিক তারে লাগলেই মানুষকে শক্ লেগে যায়।
বিদ্র: – উপরে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র জ্ঞান লাভের জন্য। যেকোনো ইলেকট্রিক কাজ করার সময় শরীরের কোন অংশ যাতে বৈদ্যুতিক তারে টাচ না হয় । সেই দিকে সাবধানতা অবলম্বন করে কাজ করতে হবে। না হলে মৃত্যু পর্যন্তও ঘটতে পারে।