ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড় মোকা বা মোখা বাংলাদেশ ও মায়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র তাণ্ডব চালাচ্ছে। এর প্রভাবে উপকূলবর্তী প্রায় ছিন্নবিছিন্ন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঝড়ের পরিস্থিতি যদি চোখে দেখা যায় তাহলে তা বিশ্বাসই করা যাবে না। কেননা ঝড়ে তীব্রতাটা এতটাই রয়েছে যে তা উপলব্ধি করা কঠিন।
প্রায় দুপুরের আগে থেকেই ঘূর্ণিঝড় মোকা বা মোখা বাংলাদেশের উপকূলবর্তী অঞ্চলে তীব্র গতিবেগে আছড়ে পড়েছে। এর গতিবেগ প্রথমের দিকে যে অনুমান করা গিয়েছিল তার থেকেও বহু বেশি। বাংলাদেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের রিপোর্ট অনুযায়ী ঝড়ের গতিবেগ প্রায় ২০০ কিলোমিটার থেকে ২১০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়।
আপনারা বুঝতেই পারছেন যে তাহলে ঝড়ের গতিবেগটা কতটাই না রয়েছে। সেখানকার ঝড়ের গতিবেগে গাছপালাগুলোকে দেখলে যেন মনে হচ্ছে দেখে গিয়ে মাটিকে ছুঁয়ে যাচ্ছে । এবং গাছ ও গাছের ডাল-পালা গুলিকে ভেঙে নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ফেলে দিচ্ছে। এর ফলে রাস্তাঘাট পুরো জঞ্জাল পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে।
এমনকি ঝড়ের কবলে পড়ে টিন ও পলিথিন ও খড়ের ছাউনি, বাড়িগুলোর ছাদকে উড়িয়ে নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ফেলে দিচ্ছি। মানুষকে ন্যাড়া করলে যে পরিস্থিতি দাঁড়ায় মাথা ঘরগুলো কেউ দেখলেই ওই রকম পরিস্থিতি মনে হচ্ছে।
অপরদিকে প্রাণ হানির কথাও তো ছাড়া যায় না, কেননা যে গতিবেগে ঝড় হচ্ছে তাতে মানুষ , পশুপাখি আরো বিভিন্ন জন্তু-জানোয়ারের, কীটপতঙ্গ খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কি পরিমান এ জীবনহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তা জানা যায়নি কেননা এই মুহূর্তে তা অনুমান করাও অসম্ভব। মানুষের মধ্যে আর্তনাদ দেখে নিজেদের চোখে জল চলে আসবে।
এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে চলছে ঝড়ের সঙ্গে জলোচ্ছ্বাস। সমুদ্রের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোর ধুলোবালিকে বাতাসের সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে বহুদূর পর্যন্ত অতিবাহিত করছে। যাই হোক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের এলাকাগুলো। তবে এর জন্য সরকারের তরফ থেকে অনেক প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মানুষকে সমুদ্র উপগ্রবর্তী এলাকা থেকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিছু মানুষকে স্কুলের মধ্যে রাখা হয়েছে, কয়েকশ মানুষকে বাংলাদেশের নেভি বিল্ডিংয়ে রাখা হয়েছে। আবার হাজার একখানেক মানুষকে হাসপাতালে মধ্যে রাখা হয়েছে। এবং কিছু কিছু মানুষ যাদের খুবই মজবুত পাকা বাড়ি রয়েছে তারা নিজের বাড়িতেই থেকে গিয়েছে।
বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীরা কয়েকদিন আগে থেকেই মাইক নিয়ে এই ঝড়ের বিষয়ে মানুষকে সতর্কতা করেছিল। এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় এবং সমুদ্রে মাছ ধরতে যাতে না যায় তার জন্য বিভিন্ন ভাবে মানুষদেরকে জানানো হয়েছে।
এই ঝড়ের জন্য মানুষ না পারছে ঠিক মত খেতে না পারছে ঠিকমতো ঘুমোতে। সকলের মধ্যেই যেন অসহায় অসহায় ভাব। বিজলী না থাকার কারণে মানুষ তার আত্মীয়-স্বজনদেরও ঠিকমতো খোঁজখবর নিতে পারছে না কেননা মোবাইলেতে চার্জ দিতে পারছি না। যার যার কাছে পাওয়ার ব্যাংক রয়েছে বা যার বাড়িতে ছোটখাটো জেনারেটর রয়েছে, তারাই শুধুমাত্র তাদের মোবাইল এবং প্রয়োজনীয় জিনিসে চার্জ দিতে পারছে।
তাছাড়া রবিবার দুটা থেকে তিনটের মধ্যে মায়ানমারের সিতুয়াই ঝড় আছড়ে পড়ে। ওই সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রায় ১৮০ থেকে ১৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। তবে মায়ানমারের সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় যে সর্বোচ্চ ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রায় ২০০ – ২১০ কিলোমিটারের কাছাকাছি।
মায়ানমারের সংবাদমাধ্যমে জানা যায় যে এই ঝড়ের প্রভাবে প্রচুর গাছ, মানুষ, পশুপাখি এবং ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমনকি কারেন্টের ক্ষতি ও ভেঙ্গে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রচুর ঘরবাড়ি। সংবাদমাধ্যমে যারা যায় যে মায়ানমারের সিতুয়া আঞ্চলিক সবচেয়ে বেশি এই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিতোয়ার নিশীতম অঞ্চল গুলি জলমগ্ন হয়ে গিয়েছিল। এমনকি শীতু অঞ্চলে যে সমস্ত মানুষেরা থাকে তারা এই ঝড় এবং জলের প্রভাবে আটকে পড়েছে বলে এমনটাই সংবাদমাধ্যমে জানা যায়।
এই ঝড়ের দাপটে মায়ানমারের অনেক অঞ্চলে ই বিদ্যুৎ নাই, টেলি সংযোগ ও বিচ্ছিন্ন রয়েছে, এমনকি টেলিফোনের টাওয়ার ও ভেঙে পড়েছে বলে দুই এক জায়গায় তাও মায়ানমারের সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়। এমনকি রবিবার নাগাদ থেকে কিছু কিছু অঞ্চলে খাবারেরও সংকট দেখা দিচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, সেই অনুযায়ী সেখানকার প্রশাসনো জোর কদমে উদ্ধারকার্য চালিয়ে যাচ্ছে এবং যতটা সম্ভব তারা বিভিন্নভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করছি।, এমন টাইম মায়ানমারের সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়।
তবে যাই হোক এটা আমাদেরকে সকলকেই আশা রাখতে হবে যেন বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের প্রশাসনগণ এবং বিভিন্ন এনজিও সংস্থা বিভিন্নভাবে যেন সহযোগিতা করে থাকে। কেননা যেভাবেই এই ঝড়ের তাণ্ডব চলেছে তাতে মানুষ অসহায়হীন হয়ে পড়েছে। ওই দুটি দেশ যাতে তাদের এই দুর্দশা কাটে উঠতে পারে, তার জন্য সমস্ত দেশের মানুষকে যথাসম্ভব সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। যদি সাধ্যের মধ্যে হয়। কেননা আজ ওই দুই দেশে ঝড় হয়েছে, আগামীকাল আমাদের দেশে হবে না এমনটা কোন ব্যাপার নয়।