summer vacation – প্রচন্ড তাপপ্রবাহ ( hot wave ) এবং গরম লু বাতাসের দাপটের জন্য পশ্চিমবঙ্গের স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি গরমের ছুটির ঘোষণা আজ থেকে। জানুন বিস্তারিত।
তাপমাত্রা দিন দিন হু হু করে বেড়ে চলেছে। প্রত্যেকদিন তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি থেকে ২ ডিগ্রি উর্ধ্বগামী হচ্ছে। সঙ্গে আবার পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ রাজ্যেই চলছে গরম লু বাতাসের প্রবাহ। মানুষ এই ভাবসা গরমে জান প্রাণ রাখার জায়গা পাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বেশিরভাগ জেলাতেই দৈনিক তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির উপরে চলে গিয়েছে। দুই এক জায়গায় তাপমাত্রা তো ৪৪ ডিগ্রী এবং ৪৫ ডিগ্রী ও ছুঁয়ে ফেলেছে।
তাছাড়া কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে যে আগামীর পাঁচ থেকে ছয় দিনে বৃষ্টির তেমন কোন সম্ভাবনা নাই। একদিকে যেমন বৃষ্টি নাই অন্যদিকে তাপমাত্রার এই বার্তামুখী মানুষকে নাজেহাল করে তুলেছে। এরূপ পরিস্থিতি কেউ এসি কিনছে বা ভালো মানের পাখা কিনে চলছে।
যদিও দিনের বেলার তাপমাত্রা থেকে রাত্রিবেলা তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি থেকে ১২ ডিগ্রি কম। তবুও একে খুব একটা কম বলা যায় না কেননা যেখানে দিনের বেলা দুপুরের তাপমাত্রা প্রায়ই ৪১ ডিগ্রি ৪২ বা ৪৩ ডিগ্রি বা 44 ডিগ্রি, সেই জায়গায় রাত্রিবেলা তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি বাবুরা ৩০ ডিগ্রি বা ৩০ ডিগ্রি এই তাপমাত্রা কমই বা কোথায়।
এই পরিস্থিতিতে সরকারও নির্দেশিকা জারি করেছে একটি নোটিশের মাধ্যমে যে বেলা 11 টার পর যেন বাড়ির বাইরে না কাজ করেন। অর্থাৎ রৌদ্রে যেন বের না হন। কেননা এরকম গরম ও রোদের পরিস্থিতিতে অনেক জায়গায় শোনা গিয়েছে যে মানুষ গরমের মধ্যে এই কাজ করতে গিয়ে বা ওইখানে গিয়ে মারা গিয়েছে।
তাই এরূপ পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীরা বা শিক্ষক-শিক্ষিকারা কিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাবে। বিশেষত গ্রামীণ অঞ্চলে স্কুলগুলো যদিও ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি হয়ে থাকে। কিন্তু বিশেষত যারা হায়ার এডুকেশনে পড়ে, অর্থাৎ গ্রাজুয়েশনের পরেই যারা কলেজে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয় বা মহাবিদ্যালয় পড়ছে তাদেরকে বাড়ি থেকে অনেকটাই পথ যেতে হয় ক্লাস করতে কলেজ বা মহাবিদ্যালয়ে। অনেকে রয়েছেন যারা ২০ কিমি বা ৩০ কিমি বা ৪০ কিমি বা ৫০ কিমি পর্যন্ত রাস্তা গিয়ে থাকে।
এই গরমের (hot wave) পরিস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষক মহাশয়দেরকে কলেজ বা মহাবিদ্যালয় কে যেতে হলে খুবই রৌদ্রের মধ্যে সমস্যায় যেতে হবে। আবার এই রোদের ফলে শরীরে ঘাম অবশ্যই দেবে, এবং এই ঘাম দেওয়ার ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যাবে, যার কারণে শরীরের জলসল্পতা দেখা দিবে এবং নানান ধরনের রোগ আক্রান্ত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা হয়ে পড়বেন। যেমন শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে, মাথা ধরে রাখবে এবং মাথা ঘোরাবে, বমি বমি ভাব আসবে, পেটের সমস্যা দেখা দেবে, জল যদি বেশি না খাওয়া হয় তাহলে কিডনির সমস্যা দেখা দিতে পারে ইত্যাদি।
তাই সরকার কর্তৃপক্ষের দ্বারা সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যে আগামী কয়েক দিন অর্থাৎ এক সপ্তাহের মতো কলেজ বা মহাবিদ্যালয় ছুটি (summer vacation ) থাকবে। প্রয়োজনে স্কুল গুলিকে ছুটি দিতে হবে। আগামী কয়েক দিন আগে সরকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন যে গরমের ছুটি কিছুদিন আগিয়ে নেয়া হবে অর্থাৎ ২৭ শে এপ্রিল থেকে গরমের ছুটি দেয়া হবে। কিন্তু এই বিপন্ন রৌদ্র ও গরমের জন্য সঙ্গে লু নামক গরম বাতাসের প্রভাবের জন্য সরকার কর্তৃপক্ষ গতকাল একটি নোটিশ জারি করে যেখানে এই ছুটির কথা বলা হয়।
নিউজ ১৮ বাংলার এডিটর বিশ্ব মজুমদার আমাদের পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে একটি ফোনে কনভারসেশন হয়। বিশ্ব মজুমদার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে জিজ্ঞেস করেন যে বেশিরভাগ জেলাতেই ৪০ ডিগ্রি বা ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছুয়ে দিয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে কি আপনাদের সরকারের তরফ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান অবশ্যই আমাদের সরকারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্কুল কলেজ গুলোকে ছুটি দেওয়ার জন্য। কারণ গরম যেহেতু এগিয়ে এসেছে এবং এখন আবহাওয়া খুবই চঞ্চল, তাই এখন যেকোনো সময় যেকোনো রকমের আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে।
তাছাড়া তিনি জানান যে কলেজ ও স্কুলের গরমের যে ছুটি ২ রা মে থেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল । কিন্তু নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে কিছু শিক্ষার্থী বলেছে যে তারা যখন স্কুল-কলেজে যাচ্ছে তখন রোদ্রের দাপটের জন্য তাদের মাথা যেন টিমটিম করে উঠছে এবং তারা নাকি অসুস্থ বোধ করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে এরূপ পরিস্থিতিতে আমাদের একটা মানবিক দায়িত্বও রয়েছে ।
তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান যে আমাদের তরফ থেকে একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে বিভিন্ন সরকারি স্কুল, সরকারি কলেজ, সরকারি মহাবিদ্যালয় আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত ছুটি থাকবে। তিনি জানান স্কুলে গঠন-পাঠন থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রশাসনিক কাজকর্ম সমস্ত কিছুই বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন যে আমি অনুরোধ করছি যেন বেসরকারি স্কুল, কলেজ ভিডিও যেন আগামী এক সপ্তাহের জন্য ছুটি দেন। কেননা যেহেতু এই সপ্তাহ আবহাওয়া গরমের একটি এলার্ট রয়েছে তাই এই অনুরোধ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে এই সরকারি স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটির জন্য ছুটির নোটিফিকেশন তো তৈরিই করছি। সঙ্গে বেসরকারি স্কুল-কলেজের জন্যও নোটিফিকেশন দেওয়া হবে তারা যেন আগামী এক সপ্তাহ তাদের ইনস্টিটিউশন গুলি বন্ধ রাখে। তিনি বলেন অনেক সময় দেখা যায় যে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ছুটি দেয়া হলেও গম্ভীর পরিস্থিতিতেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি ছুটি দেয় না। তাই তাদেরকেও অনুরোধ করব বাচ্চাদের স্বার্থে, তাদের জীবনের স্বার্থে যেন তারা ছুটি দেয়।
সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হায়ার এডুকেশন ডিপার্টমেন্টগুলি বিভিন্ন কলেজ ও ইউনিভার্সিটি কে নোটিশ পাঠায় যাতে স্কুল কলেজ আগামী ১ সপ্তাহ ছুটি থাকে। গতকাল বিকেল এবং সন্ধ্যার মধ্যেই এই নোটিশ রায় সেন্ড করা হয় সমস্ত এডুকেশনাল ডিপার্টমেন্টগুলিকে। তারা আবার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ গুলিকে এই সরকারের দেয়াল নোটিশটিকে ফরওয়ার্ড করেন। এবং কলেজ ইউনিভার্সিটির গুলি এই নির্দেশিকা মেনে কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি তাদের ছুটির নোটিশ তৈরি করে ছাত্রের মধ্যে এনাউন্স করেন যে এক সপ্তাহ তাপপ্রবাহের জন্য ছুটি (summer vacation ) থাকবে।