mocha cyclone – ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ সম্পর্কে প্রতিদিনের বিস্তারিত আপডেট জানুন। কোথায় কোথায় কত কিলোমিটার গতিবেগে আছড়ে পড়বে।
হালকা মৃদু বাতাস সকলের কাছেই প্রিয় বিশেষত শীতকাল ছাড়া । কেরলের ফিট ব্যতীত অন্যান্য ঋতুতে বাতাস মানুষের কাছে খুবই প্রিয় একটি জিনিস। যার ফলে মানুষ আরামে ঘুরতে, বসতে এবং শুতে ও কাজকর্ম করতে পারে। কিন্তু ঝড়ের নাম শুনলেই মানুষের মধ্য আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। কেননা ঝড়ে যে পরিমাণ মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং জীবন হানি হয় তা সীমাহীন।
২০২০ সালে আমফাম ঝড় দুই বাংলায় খুবই ক্ষতি ঘটিয়েছিল। সেই ঝড়ের ভয় মানুষের মধ্যে এখনো রয়েছে। তার উপরে আবার একটি ঝড় তৈরি হচ্ছে । এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ, বাংলাদেশ, মায়ানমার সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের মানুষগুলো খুবই চিন্তিত। কারণ ঝড় তৈরি হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে এবং ঝড়টি শক্তিশালী হয়ে কোন দিকে তার দিক অর্থাৎ গতিপথ হবে এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়নি। তাই সকলেই খুব চিন্তিত যে আমাদের অঞ্চলের উপর দিয়ে ঝড় প্রবাহিত হবে কি না।
এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা ঘূর্ণিঝড় ‘ মোকা ‘ সম্পর্কে প্রতিদিন আপডেট পেতে থাকবেন। যে ঘূর্ণিঝড় কবে উঠবে এবং কোন দিকে গতিপথ থাকবে। তাছাড়া এই ঝড়টি কোন কোন দেশের কোন কোন জেলা বা অঞ্চলে কিরকম গতিবেগে বইতে পারে তা প্রতিদিন আপডেটের মাধ্যমে পেতে থাকবেন।
৫ মে ২০২৩ – ৬ই মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে, এই ঘূর্ণবাতের ফলে একটি গভীর নিম্নচাপের তৈরি হবে, এবং এই নিম্নচাপের প্রভাবে ৯ই মে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ তৈরি হবে। তবে এই ঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে আভাবীরা অনুমান করছেন যে বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের কিছু অংশ এই ঝড় দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হতে পারে। তবে এইটা ভাবা একদমই ঠিক নয় যে পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে ঝড় বসবে না। আবহাওয়াবিদরা বলেছেন হয়তো হালকা পরিমাণে ঝেড় বাতাস আসতে পারে।
৭ মে ২০২৩ – ঝড়ের জেরে মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকবে। তাই বিশেষত সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে জেলেদের মাছ ধরতে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে। বিশেষত আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। আগামী ১০ এই মে ঘূর্ণিঝড়টি গতিপথ পরিবর্তন করে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এবং অনুমান করা হচ্ছে যে এটি বাংলাদেশ ও মায়ানমারের দিকে যেতে পারে।
৯ মে ২০২৩ – আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে যে আগামী ১১ তারিখ দুপুরের পর থেকে আরো বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে থাকবে ঘূর্ণিঝড় মোকা । এরপরেই জানা যেতে পারে যে এই ঝড়ের গতি মুখ কোন দিকে হবে। তবে বাইরের কান্ট্রি ইউকে ও আমেরিকার মডেল গুলো অর্থাৎ টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ওয়েদার আপডেট এর মাধ্যমে জানিয়েছিল যে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপ সৃষ্টি হচ্ছে তার গতি মুখ মায়ানমারে আছড়ে পড়বে। আবার তারা এও জানান যে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে সরাসরি গিয়ে আঘাত হানতে পারে। এবং ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়টি রঙ্গন অঞ্চলের দিকে এগিয়ে যাবে , তখন সেখানে ঝড়ের গতিবেগ ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় থাকতে পারে।
আর মানুষের মধ্যে আশঙ্কা বাড়ছে এই ঘূর্ণিঝরকে নিয়ে। কেননা যত বেশি দিন সময় নেবে ঝড়টি তত বেশি শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। আর এদিকে পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকেও নানান ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বিশেষত প্রতিকারমূলক বা সাবধানতা মূলক। পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকের মাধ্যমে এনাউন্স করা হচ্ছে এই ঝড়ের ব্যাপারে। যেন তারা আতঙ্কে না পড়ে যায় ঝড়ের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই বিষয় নিয়ে।
তাছাড়া সকলেই অপেক্ষা করছে এর গতিপথ নিয়ে। যখন এর গতিপথ সম্পর্কে জানা যাবে যে সমুদ্র উপকূলবর্তী কোন এলাকাগুলিতে আছড়ে পড়বে, তখন ওই সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকার মানুষজন কি প্রয়োজনে অন্যান্য জায়গায় স্থানান্তরিত করবে।
এই বোকা ঝড় কে কেন্দ্র করে, পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রীদেরকে নিয়ে একটি মিটিং করবেন এবং তারপরেই প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে জানিয়ে দেবে যে কিভাবে এই দুর্যোগের মোকাবেলা তারা করবে।
১০ মে ২০২৩ – আজ ১০ মে আবহাওয়া দপ্তর ‘ মোকা ‘ ঝড়ের গতিপথ সম্পর্কে তথ্য দিলেন। তারা যে সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন সেটাই হবে, অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হয়ে বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতেই আছড়ে পড়বে। ওই সমস্ত সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ১৪০ কিমি থেকে ১৬০ কিমি প্রতি ঘন্টায়।
তবে আওভাবিকরা জানান যে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং সুন্দরবন ও অন্যান্য পাশাপাশি সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোকে। কেননা হয়তো ঝড়ের কিছুটা প্রভাব পড়তেও পারে।
যদি রাজ্যের কোন কোন সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চল এই ঝড়ের কবলে পড়ে তার জন্য সরকারের তরফ থেকে নবান্ন,কলিকাতা ও লালবাজারে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এবং সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে চলছে বিশেষভাবে নজরদারি।
এছাড়া আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন ঘূর্ণিঝড় মোকার প্রভাবে বাংলায় খুবই গরম বাড়তে পারে। দক্ষিণবঙ্গে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বেশিরভাগ জেলা গুলিতেই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়াবিদরা অনুমান করেছে। এবং উত্তরবঙ্গেরও দুই থেকে তিনটি জেলাতে চলবে তব প্রবাহ।
১১ মে ২০২৩ – নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে আজ রাত্রের মধ্যেই ঝড়ে পরিণত হবে। নিম্নচাপটি চারিদিক থেকে ঝুলিয়ে ওয়াজ সংগ্রহ করার কারণে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় বেশিরভাগ জেলাতেই শুষ্ক এবং খুবই গরম আবহাওয়া বিরাজ করবে। আবার পশ্চিমবঙ্গের কিছু কিছু জেলায় তাপপ্রবাহ চলবে। নিম্নচাপ টি ঝড়ের আকার ধারণ করার পর ধীরে ধীরে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাবে।
১২ মে ২০২৩ – আজকের আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী আরো শক্তি বাড়িয়ে মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছাবে ঘূর্ণিঝড় মোকা । এরপর ধীরে ধীরে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের দিকে এগিয়ে যাবে, তবে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের কক্সবাজার বা তার আশেপাশে গিয়ে ঝড়টির ল্যান্ডফল হতে পারে অর্থাৎ আছড়ে পড়তে পারে।
১৪ মে ২০২৩ – ঘূর্ণিঝড় মোকা আজ বেলা এগারোটা থেকে বারোটার মধ্যেই বাংলাদেশের কক্সবাজার, টেকনাফ, মহেশখালী, চট্টগ্রাম, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ এবং পাশাপাশি সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড় আছড়ে পড়বে, এবং এই সমস্ত জায়গাগুলির উপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে।
এরপর, বিশেষত দুপুর একটা থেকে দুটোর মধ্যে মায়ানমারের উপকূলবর্তী এলাকা গুলিতে এই ঝড়ের ল্যান্ড ফল হবে। সেই সময় এর গতিবেগ মোটামুটি ১৩০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার পার ঘণ্টায় থাকতে পারে।